সিরাজুল হক একটি নাম একটি ইতিহাস। সিলেটের সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনে সবার কাছে ঔপন্যাসিক হিসেবে বেশ পরিচিত। তবে কবিতা ও ছড়ার মান ছিল উচু মানপর। সাহিত্য আসরে ছিলো সরব উপস্থিতি। অসুস্থ না হলে সাহিত্য আসর মিস করতেন না। সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ, সিলেট মোবাইল পাঠাগার, সিলেট লেখক পরিষদ কেন্দ্রীয় সংসদ, সাইক্লোন কেন্দ্রীয় সংসদ সহ সব সাহিত্য আসরে তিনি নিয়মিত যেতেন। লেখা পাঠ করতেন। আলোচনা রাখতেন। কেমুসাসের পাঠাগারে প্রচুর পড়াশোনা করতেন। বিভিন্ন বিষয়ে অনেক জ্ঞান রাখতেন তিনি। গত ১৫ এপ্রিল ২০২৫ তিনি দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেন (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
কবি, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক ও লেখক সহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন। স্মৃতিচারণের মাধ্যমে উঠে এসেছে ঔপন্যাসিক সিরাজুল হকের জীবনের বিভিন্ন দিকের আলোচনা। চলুন পড়া যাক বিশিষ্টজনের কাছে কেমন ছিলেন সিরাজুল হক। লেখাগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে সবার ফেইসবুক থেকে।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসস সিলেটের ব্যুরো প্রধান, গল্পকার সেলিম আউয়াল বলেন, ‘ঈদের পরের সাহিত্য আসরগুলোতে সিরাজ ভাইকে দেখতে না পেয়ে তার খোঁজ নিতে শুরু করেন কবি ফয়জুল হক। শেষ পর্যন্ত আজ (১৯ এপ্রিল ২০২৫) বিকেলে তিনি তার ফাজিলচিস্তের বাসায় গিয়ে জানতে পারেন- কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাপ্তাহিক সাহিত্যসভাগুলোতে আজীবন উপস্থিত ঔপন্যাসিক সিরাজুল হক (সিরাজ ভাই) গত ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। দোয়ারাবাজার এলাকায় তার গ্রামের বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তিনি কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছিলেন। মহান আল্লাহপাক তাকে জান্নাত নসিব করুন।’
রাজনীতিবিদ ও কবি সালেহ আহমদ খসরু বলেন, ‘হঠাৎ বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। তবে কি উনাকে ভালবেসেছিলাম!! ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন। প্রচন্ড মেধাবী ছিলেন।’
সিলেট লেখক পরিষদ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি, সিলেট মোবাইল পাঠাগারের সাবেক সভাপতি দেওয়ান এ এইচ মাহমুদ রাজা চৌধুরী বলেন, “সিলেটের সাহিত্যঙ্গনে নিখাত সাহিত্য প্রেমিক, সাহিত্যপ্রেমিক এক উজ্জ্বল নক্ষত্র যাকে আমরা ঔপন্যাসিক সিরাজুল ইসলাম নামে জানি। তবে তাঁর চিন্তক কলম শক্তি ঔপন্যাস ছাড়াও কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ, ইতিহাস ও গবেষণায় সদাসর্বদা তথ্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে সাহিত্যের পাতায় তাঁর চোখ প্রাণ নিমজ্জিত থাকতো। কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে প্রত্যেক দিন গবেষণায় নিমজ্জিত থাকতেন তাছাড়াও কেমুসাসের সাহিত্য আসর, সিলেট মোবাইল পাঠাগার, সিলেট লেখক পরিষদ কেন্দ্রীয় সংসদ, সাইক্লোনের সাহিত্য আসরে নিয়মিত আসতেন। কোনো সাহিত্য আসরে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন সেটা কল্পনা করা যায় না। বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। আমার ধারণা জীবনের শুরু থেকেই সাহিত্য চর্চার সাথে উৎপৎভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। তাই আমাদের সিলেটের সাহিত্যকর্ম বিচারে সৃষ্টি শিল্পীর তিনি প্রশংসার পঞ্চমুখ ছিলেন। সে ক্ষেত্রে তাঁর জীনটাই সাহিত্যে ভরপুর। আমাদের জানামতে উনার দুই ছেলে এক মেয়ে। এক ছেলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হিসেবে বর্তমানে আমেরিকাতে পিএইচডি ডিগ্রি করছেন। আমি তাঁর (সিরাজ ভাই) আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি”
কবি আবু সালেহ আহমদ বলেন, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সিরাজুল হক একজন লেখক, সাহিত্যসেবি, শিক্ষকতা করেছেন। কেমুসাস লাইব্রেরীতে প্রচুর পড়াশোনা করতে দেখেছি। সিলেট সাহিত্যপাড়ার নিবেদিত একজন প্রাণ পুরুষ ছিলেন। সহজ সরল মানুষটি সাইক্লোন, ইউ এস এ বাংলা আন্তর্জাতিক সাহিত্য ফোরাম, কেমুসাস, মোবাইল পাঠাগার, শাহজালাল সাহিত্য ফোরাম সহ বিভিন্ন আসরে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। কেমুসাস সাধারণত সম্পাদক, গল্পকার সেলিম আউয়াল ভাইয়ের পোস্ট থেকে জানলাম গত ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। ইদানিং উনার কথা বারবার মনে পড়ছিল। এত নিরবে তিনি চলে যাবেন ভাবলে খুবই কষ্ট লাগে। আমরা ইউ এস এ বাংলা আন্তর্জাতিক সাহিত্য ফোরামের পক্ষ থেকে শোকপ্রকাশ করছি এবং দোয়া করি সিরাজুল হক ভাইকে আল্লাহ তায়ালা যেন বেহেস্তের সর্বোচ্চ স্থান জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করেন (আমিন)।’
প্রাবন্ধিক শামসীর হারুনুর রশীদ বলেন, ‘চলে গেছেন না ফেরার দেশে সিলেটের এক শক্তিমান তত্ত্ববিদ, কবি ও ঔপন্যাসিক সিরাজুল হক। ফেসবুকে খবরটি দেখে খুবই মর্মাহত হলাম। মহান আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন আমিন। তিনি বাস্তবিক অর্থে একজন পণ্ডিত ছিলেন। কাউকে বিনা চ্যালেঞ্জে ছাড়তেন না; ছিল বুকভরা সাহস ও যোগ্যতা। মা-উপন্যাসের লেখক সিরাজুল হক ভাই ছিলেন নিউরুলুজি বিশেষজ্ঞ। কখনো প্রয়োজনে কখনো মজাকরে নানা সময়ে বিভিন্ন তথ্য জিজ্ঞাসা করতাম, রেফারেন্স ভিত্তিক উত্তর দেয়া তার জন্য স্বাভাবিক ছিল। বিভিন্ন বিষয়ে সহমতের চেয়ে ভিন্ন মত পোষণ করা ছিল সিরাজ ভাইয়ের স্বাতন্ত্র্য। জমিয়ে রাখতেন সিলেটের সাহিত্য আসরগুলো। আমাকে খুবই স্নেহ করতেন এবং বলতেন আপনি দেখছি অনেক পড়েন। এভাবে সকলকে চলে যেতে হবে একদিন না একদিন। বিদায়বেলায় আমাদের ওফাতটা যেন আনন্দময় হয়—এজন্য লেখকদের পরস্পরে যোগাযোগ থাকা খুবই দরকার। বিশেষ করে সিনিয়ররা তরুণদের কাছে টানুন, জ্ঞানকে কবরে শায়িত করার চেয়ে বাঁচিয়ে রাখা নিশ্চয়ই ভালো। সবাই সুস্থ এবং ভালো থাকুন, এই প্রত্যাশা।’
কবি শান্তা কামালী বলেন, ‘আমি সিলেটে যে কয়টা সাহিত্য অনুষ্ঠানে গিয়েছি, মোটামুটি সব কটাতেই উনাকে দেখতে পেয়েছি। কিন্তু আর কোনো দিন দেখতে পাবো না! এইটা ভেবে ভীষণ রকমের একটা কষ্ট অনুভব করছি। তিনি কথাসাহিত্যিক সিরাজুল হক। তবু তো একজন ফয়জুল হক ভাই ছিলেন উনার খবর নেওয়ার জন্য। তিনি তার খোঁজ নিতে বাড়ি পর্যন্ত চলে গেছেন! যদিও গিয়ে তাকে পাননি। জানতে পারলেন, তিনি গত ১৫ এপ্রিল এই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। কিন্তু ভাবছি, আমার কি এমন কেউ আছেন, যিনি বা যাঁরা এভাবে আমার খবর নেবেন?’
কবি সাজন আহমদ সাজু বলেন, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাপ্তাহিক সাহিত্য আসরের নিয়মিত চেনা মুখ ঔপন্যাসিক সিরাজুল হক ভাই ইন্তেকাল করেছেন গত ১৫ ই এপ্রিল। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন… ঔপন্যাসিক সিরাজুল হক ভাই সকলের পরিচিত প্রিয়ভাজন, উনার জ্ঞানগর্ভ আলোচনা কারো পছন্দ হতো, কারো অপছন্দ লাগতো স্পষ্টবাদী সাহিত্য আলোচনা। সরলে গরল মিশানো আমার বড্ড অপছন্দ, মুখের উপর তেতো সত্য কথা বলতে পারাটা ব্যক্তিত্ব মনে করি আমি। মুখ আর মুখোশে ঢেকে থাকা সাহিত্য অঙ্গনে বর্ণচুরাদের সংখ্যা বেশি হলেও এক দুজন থাকেন স্রোতের বিপরীতে।আমি সেই ধারাকেই আঁকড়ে ধরে পথ চলি। কেমুসাস কিংবা মোবাইল পাঠাগারে সিরাজ ভাইর বৈজ্ঞানিক আলোচনা আমি উপভোগ করতাম।
গত বৃহস্পতিবার সাহিত্য আসর শেষ করে চা চক্রে কবি মাহফুজ জোহা আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন সিরাজ ভাইকে দেখতে যাবো কি-না। তখন আমার সাথে রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ছিলেন অন্য একটি গুরত্বপূর্ণ প্রোগ্রামে যাওয়া জরুরি থাকায় কবি মাহফুজ জোহাকে না বলতে হয়ছিলো, উনিও জানতেন না আমরা যাকে দেখতে যাবো উনি দিন তিনেক আগে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন।
আজ গল্পকার সেলিম আউয়াল ভাইর ফেইসবুক পোস্ট দেখে জানতে পারলাম তিনি গত ১৫ এপ্রিল আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। বিষয়টি দু:খজনক, সকলের পরিচিত একজন লেখক আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেলেন আমরা সাহিত্যের লোক জানতেও পারলাম না, এর দায় কার উপর বর্তায়। সিরাজ ভাই’র পরিবারের, সাহিত্যকর্মীদের নাকি মিডিয়া কিংবা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি কিংবা মিডিয়া ব্যক্তিদের কিছু হলে ঘটা করে প্রচার হয় অথচ একজন শব্দশ্রমিকদের এই অকাল প্রয়াণ কেউ জানতেও পারলোনা, যা অত্যন্ত পরিতাপের।
আমাদের সাহিত্য অঙ্গনের সবার জন্য সিরাজ ভাইর ঘটনা একটি শিক্ষণীয় বার্তা-পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ঐক্য, যোগাযোগের সেতুবন্ধন তৈরি অত্যাবশ্যক, পাশাপাশি আমাদের পরিবারের লোকদেরও সাহিত্যের সাথে নূন্যতম সম্পৃক্ততার একটা ম্যাসেজ সিরাজ ভাই’র মৃত্যু দিয়ে গেলো।একজন সিরাজ ভাই কত জনপ্রিয় আর সকলের প্রিয়ভাজন ছিলেন উনার ফ্যামিলি হয়তো তা অনুধাবনও করতে পারেনি। আজকের এই মাতম থেকে লেখকদের পরিবারও উপলব্ধি করুন সাহিত্য যুগে যুগে কালে কালে মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় করে,আমাদের সৃষ্টি আমাদের সাহিত্যকর্ম মানুষের মনে দাগ কাটে। আল্লাহ প্রিয় মানুষ ঔপন্যাসিক সিরাজুল হক ভাইকে জান্নাতবাসী করুণ (আ-মিন)।”
কবি এম আলী হুসাইন বলেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন কবি, ঔপন্যাসিক সিরাজুল হক আমাদের মাঝে নেই খবর শুনে খুবই মর্মাহত হলাম। তাঁর সাথে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ এর সাপ্তাহিক সাহিত্য আসরে তিনি নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন। তাঁর মৃত্যুর খবর কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ এর সাধারণ সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়াল ভাইয়ের পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারি তিনি গত ১৫ এপ্রিল ইন্তেকাল করেছেন। একজন সাদামাটা কবির জন্য মহান আল্লাহপাক এর কাছে প্রার্থনা করি তাঁকে যেনো পবিত্র জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। আ মীন।’
প্রবাসী বাংলাদেশি লেখক জুনায়েদুর রহমান বলেন, “ঔপন্যাসিক সিরাজুল হককে নিয়ে ফেসবুকে আমি একটা লেখা পোস্ট করেছিলাম। এতে অনেকে হয়তো ভেবে নিবেন, সিলেটের সাহিত্য অঙ্গনের মানুষদেরই সব দায়। বিষয়টি ভিন্ন আঙ্গিকে ব্যাখ্যা করি। মরহুম সিরাজ চাচা কিছুটা ভিন্ন টাইপের মানুষ। তিনি কারও সাথে যোগাযোগ রাখতেন না। তাঁর কোনো বন্ধু নেই। এমনকি তাঁর কোনো স্মার্ট ফোনও নেই। এজন্য কোনো সমস্যা হলে কিংবা তিনি অসুস্থ হলে তাঁর খোঁজ পাওয়া টা স্বাভাবিকভাবেই মশকিল। সর্বশেষ হুট করে তিনি মারা যাবার পর যখন কেমুসাসে আসছেন না তখন সিলেটের সাহিত্য অঙ্গনের মানুষরাই বের করেছে তিনি আর বেঁচে নেই। কিন্তু এটাও তো হতে পারতো, তিনি অসুস্থ হয়েছেন কিংবা মারা গেছেন তাঁর পরিবারের লোকজন কেমুসাসের দারোয়ান কে অন্তত সংবাদ টা দিয়ে গেছে। কিংবা শ্রদ্ধাভাজন সেলিম আউয়াল বা অন্য কাউকে একটা ফোন করেছে।
অনেকে জেনে অবাক হবেন, ঔপন্যাসিক সিরাজুল হক এর এক ছেলে শাবিপ্রবির প্রফেসর। সম্ভবত তিনি বর্তমানে আমেরিকায় পিএইচডি করছেন। এছাড়া উনার এক মেয়ে এবং মেয়ের জামাই এই শহরেই কলেজের লেকচারার। এরকম সচেতন উত্তরাধিকারী আরও দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করি। সব দায় সাহিত্য অঙ্গনের মানুষের নয়। আমাদের ব্যক্তিগত এবং পরিবারেরও দায় আছে৷ আমরা সবাই এই মানুষ টার জন্য মহান রবের কাছে দোয়া করি।”
কবি মনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘ঔপন্যাসিক সিরাজুল হক, সিলেটের বিভিন্ন সাহিত্য আড্ডা-অনুষ্ঠানে ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি। ছিলেন কিছুটা গম্ভীর প্রকৃতির, তবে বক্তব্যে বুঝা যেতো তাঁর তাত্ত্বিকতা। সিলেটের প্রথাগত কবি, সাহিত্যকদের চেয়ে তিনি অবশ্যই আলাদা ছিলেন। আমার অল্প দিনের দেখায় মনে হয়েছে, সিলেটের তথাকথিত সাহিত্যঙ্গন উনাকে অবমূল্যায়ন করছে! তবুও তিনি উপস্থিত থাকতেন। এটাই হয়তো ছিল তার সহজ, সরল মনে বহিঃপ্রকাশ।
তাই বলে এতো অবহেলায় এতোটাই নিবৃতে চলে গেলেন তিনি। গত ১৫ এপ্রিল তিনি মারা গেলেন। অথচ যেই সাহিত্য আড্ডা-অনুষ্ঠান গুলোতে তিনি জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় গুলো ব্যয় করেছেন সেখানকার উপস্থিত মহলের কেউ জানেন না সে খবর! ৫ দিন পর আজ গল্পকার ও সাংবাদিক সেলিম আওয়াল ভাইয়ের ফেসবুক পোস্টের বদৌলতে খবর হয়েছে মহলে। এমনটা কেন? নিজেকেই প্রশ্ন রাখি। এই দায় আমার, আমাদের।’
মোঃ শরীফ আহমদ বলেন, ‘খবর শুনে কষ্ট লাগলো! মানুষটির সাথে কতো সাহিত্য অনুষ্ঠান করেছি,যথেষ্ট মেধাবী ছিলেন,স্পস্ট ভাষী ও আবেগময়ী বক্তা ছিলেন।খুব বড় মাপের একজন পাঠক, কেমুসাসের সিংহভাগ বই পড়ে শেষ করেছেন যিনি আমাদের সিরাজ ভাই। আল্লাহ যেন জান্নাতুল ফেরদাউসের মেহমান হিসেবে কবুল করেন।”
নাম না জানা একজন লেখক বলেন, সিরাজ ভাইয়ের সাথে হায় হ্যালো সম্পর্কের বেশি ছিলো না কখনও তবে তিনি প্রতি সাহিত্য আসরে উপস্হিত থাকতেন, লেখা পড়তেন। অনেক সময় তার কঠিন লেখা বক্তব্য অনেকের ভালো লাগতোনা এতে তিনি রাগ করলেও রাগ বেশি সময় রাখতে পারতেন না পরবর্তী সপ্তাহে তিনি সবার আগে ঠিকই আসর গুলোতে আসতেন।আজ তার মৃত্যুর খবর শুনে মহান আল্লাহর কাছে তার জন্য দোয়া করছি আল্লাহপাক য়েন সিরাজ ভাই কে ক্ষমা করেন এবং জান্নাত দান করেন (আমীন)।
ঔপন্যাসিক সিরাজুল হক কে নিয়ে আরো যারা লিখেছেন বা লিখবেন সবার লেখা একসাথে করে একটা বই বের করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। তাই, যারা আমার এই লেখাটি পড়বেন সবাই সিরাজ ভাইকে নিয়ে লেখাটি আমার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ।