২৪শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বিকাল ৫:০৫
সংবাদ শিরোনাম
শান্তিগঞ্জে সুরমা উচ্চ বিদ্যায় ও কলেজের এইচ এস সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত সিলেটের মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে প্রকল্প সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে – মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের বিশেষ সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ সিলেট মহানগরীর নতুন কমিটি অনুমোদন ছাতকে এসপিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি দোয়ারাবাজারে গৃহবধূ রোকসানা হত্যা : ঘাতক জসিমের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন পূর্ব পাগলা ইউপি জামায়াতের বায়তুলমাল পক্ষের প্রস্তুতি বৈঠক সম্পন্ন সিলেটে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা শুরু চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের কবল থেকে রক্ষার দাবি এলাকাবাসীর Old Age Home—a Touching and Painful Reality By Md. Mahbub-ul Alam

আমার ছোটোবেলার রোজার ঈদ : মোহাম্মদ আব্দুল হক

মোহাম্মদ আব্দুল হক
  • আপডেট শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৬২ বার পঠিত
মুসলিমদের দুইটি ঈদ। একটি রোজার ঈদ বা ঈদ-উল-ফিতর অপরটি কোরবানীর ঈদ বা ঈদ-উল-আজহা। আমার ছোটোবেলার দুই ঈদের মজা প্রায় কাছাকাছি। এখানে সংক্ষেপে স্মরণ করছি আমার ছোটোবেলার রোজা ঈদের মজার কথা। বাবাকে মনে পড়ে। কারণ, যেভাবেই হোক বাবা ঈদের একটি জামা কিনে দিতে চেষ্টা করতেন। আর মাকে মনে পড়ে। কারণ, মা ঈদের জামাটি লুকিয়ে রাখতেন, যাতে কেউ দেখতে না-পায়। আমার বাবা হাজী মোঃ আব্দুল আজিজ তালুকদার আমাকে ছোটোবেলায় অর্থাৎ অ আ ক খ শেখার বয়স থেকেই গ্রাম থেকে শহরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তবে আমার চৌদ্দ পুরুষের গ্রাম হরিনাপাটি থেকে আমি সুনামগঞ্জ শহরে গেলেও বিভিন্ন উৎসবে ঠিক-ই গ্রামে ফিরে আসতাম। বিশেষ করে আমাদের ছোটোবেলায় ঈদ উদযাপন করতাম গ্রামের বাড়িতে। তখন খুব মজা হতো। সেসব কথা এখন-ও মনে পড়ে।
আমরা-তো এই সময়ে-ও আছি। তাই এখনকার ছেলে-মেয়েদের ঈদ আয়োজন আমাদের চোখের সামনে-ই হচ্ছে । আমরা দেখতে পাচ্ছি এবং খাপ খাইয়ে চলতে চেষ্টা-ও করছি। কিন্তু আমাদের ছোটোবেলায় ঈদে কিভাবে মজা করতাম তা-তো ওরা জানে না । তাই আজ আমার স্মৃতির ভান্ডার থেকে কয়েক লাইন জানিয়ে দিতে খুব-ই ইচ্ছে করছে। তখন ঈদের সময় ঘনিয়ে এলেই শুরু হয়ে যেতো নানান রকম জল্পনা-কল্পনা। রাত পোহালেই ঈদ। আর ঈদ মানে ঈদ মহা-আনন্দ ! সে সময়ে আমরা ঈদের নতুন জামা খুব কঠিন ভাবে লুকিয়ে রাখতাম যাতে কেউ দেখতে না-পায়। কারণ তখন একটি কথা প্রচলিত ছিলো, ঈদের আগে কেউ নতুন জামা দেখে ফেললে ঈদ চলে যাবে অথবা বাসি হয়ে যাবে। তাই কিছুতেই ঈদের আগে অন্যকে নতুন জামা দেখানো হতো না। এই লুকোচুরি খেলার মাঝে এক ধরনের মজা পেতাম।
এই একবিংশ শতাব্দিতে এসে শহরে-তো পুকুরে গিয়ে গোসল করার সুযোগ একেবারে নাই বললেই চলে। গ্রামেও এখন অনেকে পুকুর ভরাট করে ঘর বানিয়েছে। আমাদের ছোটো সময়ে একটি মজার উৎসব হতো পুকুরে ঈদের গোসলকে কেন্দ্র করে। আমাদের গ্রামের বাড়ির সামনে বিরাট পুকুরের কথা আজ-ও মনে পড়ে । ঈদের দিন খুব ভোরে কাক ডাকার আগেই চিৎকার করে ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’ বলে দৌড়ে ছুটতাম পুকুর ঘাটে। তারপর বড়োদের সাথে সাঁতার কেটে গোসল সেরে ঘরে আসতাম। ঘরে এসে নতুন জামা-কাপড় পড়ে শুরু হতো বড়োদেরকে পা ছুঁয়ে সালাম করা। ঈদের নামাজের জন্যে বড়োদের সাথে মিলে ঈদগাহ্-তে যেতাম পায়ে হেঁটে । অবশ্য বর্ষা হলে নৌকায় চড়ে ঈদের জামাতে শরীক হতাম। ঈদের গোসলের কথা মনে হলে এখন-ও মজা পাই।
ঈদের নামাজ শেষে আমরা সম বয়সীরা মিলে সারা গ্রাম ঘুরে বেড়াতাম। তাছাড়া তখন আমাদের ফুপুদের বাড়ি এক-ই গ্রামে-ই ছিলো। আর চাচাদের ঘর-তো আমাদের এক-ই বড়ো বাড়িতে। তাই সারাদিন এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরে বেড়াতাম পরম নিশ্চিন্তে। আর সবার ঘরে-ই সিলেটি ‘হান্দেশ-ফিটা খাইতাম’। আর চাচা ও ফুপুদেরকে সালাম করলে এক টাকা সালামি ‘ফাইতাম’! কি-যে খুশি ‘হইতাম’, ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। দুঃখজনক হলো আমি যখন এসব কথা স্মরণ করছি, তখন মা, বাবা, চাচা, ফুপু কেউ আর বেঁচে নেই। দোয়া করি আল্লাহ্ তাঁদেরকে যেনো ক্ষমা করে দেন এবং জান্নাতুল ফেরদৌসে যেনো তাঁরা স্থান পেয়ে যান।
এসব কিছুই এখন স্মৃতি। দিন বদলে গেছে। সময় চলে যায় তবু অনেক ঘটনা একেবারে-ই যেনো জীবন্ত থেকে যায়। এ-কাল বলি আর সে-কাল বলি সবার সব কথার শেষ কথা হলো, ঈদ মানেই আনন্দ। মনে জেগে থাকুক আমাদের প্রাণের ঈদ। প্রাণবন্ত হোক ঈদ সকল সময়ের। ঈদ হোক সকলের। ঈদে দূর হোক ধনী-গরিব ভেদাভেদ। শুভেচ্ছা জানাই, সকল কবি, লেখক, সাহিত্যিক ও পাঠককে। ঈদ মোবারক।
লেখক _ মোহাম্মদ আব্দুল হক

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2025 AkashBangla. Developed by PAPRHIHOST
Theme Dwonload From Ashraftech.Com
ThemesBazar-Jowfhowo