‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়‘
বিদায় অনুষ্ঠান কেবল একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সমাপ্তি এবং নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা। এ যেন এক মধুর সুরের বিদায়, যেখানে মিশে আছে শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতির মিষ্টি সুর। এই বিশেষ দিনে শিক্ষার্থীরা তাদের অতীতের দিকে তাকায়, যেখানে রয়েছে বন্ধুদের সাথে হাসি-খুশির মুহূর্ত, শিক্ষকদের পথনির্দেশনা, জ্ঞান অর্জনের আনন্দ, পরীক্ষার ভয় এবং সাফল্যের উল্লাস – যেন এক অমূল্য সম্পদের ভাণ্ডার।
এই স্মৃতিগুলো হৃদয়ে নিয়ে তারা এগিয়ে যায় ভবিষ্যতের পথে, যেখানে নতুন স্বপ্ন, নতুন লক্ষ্য ও নতুন চ্যালেঞ্জ তাদের অপেক্ষা করছে। বিদায় অনুষ্ঠান শুধুমাত্র বিদায় নয়; এটি একটি নতুন শুরু। এ যেন এক প্রজাপতির উড়ে যাওয়া, যার ডানায় রয়েছে অজানা ভবিষ্যতের রঙ।
সৈয়দ নাসির উদ্দীন (র.) স্কুল অ্যান্ড কলেজের ‘এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫‘ শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল ২০২৫) দুপুর ২ ঘটিকার সময় সিলেট নগরীর চৌকিদেখি ইলাশকান্দিতে অবস্থিত সৈয়দ নাসির উদ্দীন (র.) স্কুল অ্যান্ড কলেজ’র প্রাঙ্গণে ‘এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫’ শিক্ষার্থীদের এডমিট কার্ড বিতরণের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় বিদায়ী অনুষ্ঠান।
এ সময় উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে এডমিট কার্ড, কলম, স্ক্যাল বিতরণ করেন সৈয়দ নাসির উদ্দীন (র.) স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, রাজনীতিবিদ হুমায়ুন আহমদ মাশুক। এসময় উপস্থিত ছিলেন, স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাকিয়া বেগম। ইংরেজি শিক্ষক আবদুল কাদির জীবনের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র শিক্ষক সাদিক আহমদ ও স্কুলের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা।
‘এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫’ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বৃষ্টি আক্তার, ফাইয়াজ বিন আদিল, নাজমিন আক্তার, রেহনুমা তারান্নুম, ফাতেমা আক্তার সুমি, মাইশা বেগম, ফাহমিদা জাহান শরনা, নাহিদা আক্রান্ত সোনিয়া, তাহমিনা আক্তার, মাহিন আহমদ, ফাতেমা জান্নাত সামিয়া, রুনা আক্তার লুবনা, মাজেদা আক্তার আঁখি, সাদ্দাম আহমেদ, সাকিব আল হাসান, ইরফান আহমদ, মুমিন, মিনহাজ, সায়েম আহমদ স্বাধীন প্রমুখ।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হুমায়ুন আহমদ মাসুক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আজকের এই দিনে আমি তোমাদের সবার প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তোমরা কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে এই পর্যায়ে পৌঁছেছো। তোমাদের প্রতিটি কৃতিত্বের পিছনে রয়েছে শিক্ষক, অভিভাবক এবং বন্ধুদের অবদান। আমি বিশ্বাস করি, তোমরা এ যাত্রা পথে অনেক কিছু শিখেছো এবং আগামী দিনে তোমাদের শিক্ষার আলো দিয়ে জীবনকে আরও সুন্দর করবে।
তিনি আরো বলেন, এই স্কুল তোমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকবে। এখানে যে জ্ঞান, মূল্যবোধ এবং আদর্শ অর্জন করেছো তা তোমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। তোমাদের সফলতা আমাদের সকলের গর্বের কারণ হবে। তোমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ আসবে। আমি আশা করি, তোমরা তোমাদের স্বপ্ন ও লক্ষ্য পূরণে অবিচল থাকবে। কখনও হাল ছেড়ে দিবে না এবং জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে সম্ভাবনা হিসেবে গ্রহণ করবে।
শিক্ষার্থীরা তাদের অভিব্যক্তির মাধ্যমে বলেছেন, এই বিদায় অনুষ্ঠানে আমরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দদের। আপনারা আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনারা শুধু আমাদের শিক্ষকই নন, আপনারা আমাদের জীবনদর্শন, আমাদের প্রেরণা, এবং আমাদের শক্তি। আমরা জানি, আজকের বিদায় কেবল একটি সঙ্গী হিসেবে যাত্রার শেষ নয়, বরং একটি নতুন দিকের যাত্রা পথ। আমাদের ভবিষ্যৎ সফলতার দিকে এগিয়ে যেতে, আমাদের সকলের আশীর্বাদ প্রয়োজন। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে যেখানেই থাকি, আপনাদের দেওয়া শিক্ষা ও মূল্যবোধ আমাদের জীবনের প্রতিটি ধাপে আমাদের সঙ্গী থাকবে।